জনমেজয় ও বৈশম্পায়নের প্রথম আলাপ
- nitishb
- Jan 9, 2018
- 2 min read
Updated: Jan 23, 2022
হস্তিনাপুর নৃপতি জনমেজয়, সর্প-যজ্ঞের আয়োজন করেছিলেন তার পিতা পরীক্ষিতের মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে(পরীক্ষিত সর্প-রাজ্ তক্ষকের দ্বারা নিহত হন) |

এই যজ্ঞ চলাকালীন সকল সর্প অগ্নিতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মাহুতি দিতে বিবশ হয় ,যজ্ঞ চলাকালীন মহারাজের সম্মুখে এসে উপস্থিত হন ঋষি জরৎকারু এবং মনসাদেবীর পুত্র ঋষি আস্তিক, রাজা তাকে উপহার দিতে চাইলে তিনি উপহার স্বরূপ যজ্ঞ বন্ধ করার অনুরোধ করেন কারণ এর ফলে নিস্পাপ সর্পকুলের বৃথা রক্তপাত ঘটছে, কিন্তু রাজা ছিলেন নিজের পিতার মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে বদ্ধ পরিকর তাই তিনি এতে অস্বীকৃত হন, তাই তাকে আস্তিক মুনির বঞ্চনার স্বীকার হতে হয় | অবশেষে, ঋষি ব্যাস তার শিষ্যসকল সমাবেশে এসে পৌঁছান এবং এই দুই ঋষির মধ্যস্থতায় রাজা বোঝেন যে প্রতিশোধস্পিহা অধর্ম(আর এও জানেন তক্ষকের হাতে রাজা পরীক্ষিতের মৃত্যুর আসল কারণ পরীক্ষিতের পুরানো লব্ধ এক অভিশাপ )|
“नर्मदायै नमः प्रातः नर्मदायै नमो निशि | नमोऽस्तु नर्मदे तुभ्यं त्राहि मां विषसर्पदः | सर्पापसर्प भद्रं त गच्छ सर्प महाविष। जनमेजयस्य यज्ञान्ते आस्तीकवचं स्मर।। जरत्कार्वोर्जरत्कर्वां समुत्पन्न महायशाः | अस्तीक सत्यसन्धो मां पन्नगेभ्यो अभिरक्षतु |”
এখানে উল্লেখ্য, বৈশম্পায়ন রাজাকে জানান যে মহাভারত ব্যাস রচিত তবে লিপিকার রূপে ভূমিকা পালন করেছিলেন স্বয়ং গনেশ |গনেশ ঋষি ব্যাসকে পরীক্ষা করার জন্য শর্ত রাখেন যে তিনি একমাত্র তাহলেই লিখবেন যদি ঋষি একটানা পুরো মহাভারত বর্ণনা করেন,মাঝে কোনো বিরতি নিতে পারবেন না | বিরতি নিলেই গনেশ অন্তর্ধান হবেন | ঋষিও গনেশ-এর পরীক্ষা উত্তীর্ণ করেন এক কৌশলে, তিনি শর্ত রাখেন গনেশ যাতে সেই সকল শব্দই লেখেন যার অর্থ তিনি প্রথমে অনুধাবন করতে পারেন, এর ফলে যখন লেখা শুরু হয় যা একটানা কয়েক বছর চলে তার মাঝে মাঝে যখন ব্যাসদেবের বিশ্রাম,ক্ষুদা বা স্নানের প্রয়োজন হতো তিনি কিছু জটিল পংতির উচ্চারণ করতেন যা বুঝতে গনেশের অনেক সময় লাগতো ফলে দ্বৈপায়ান ব্যাস কিছু বিরতিকাল পেয়ে যেতেন |
আজকের মহাভারতে বর্তমানে শ্লোক সংখ্যা ১০ ০,০০০, তবে আদি মহাভারতে শুধুমাত্র ৮৮০০ টি শ্লোক ছিল এবং নাম ছিল তখন 'জয়া'(জয়াম, গণেশ রচিত), বৈশম্পায়ন রাজাকে বর্ণনা করেন কিছু অধিক গল্প সহযোগে তাতে দৈর্ঘ্য গিয়ে দাঁড়ায় ২৪০০০-এ, এবং নাম হয় বিজয়া(বিজয়ম)| পরবর্তী প্রজন্মের কাছে মহাভারত ছড়ায় চারণ-কবি উগ্রশ্রবাসের হাত ধরে(তিনি ছিলেন ব্যাস এর শিষ্য), উগ্রশ্রবাস(সুত-মুনি,সুত-গোস্বামী), নৈমিষর জঙ্গলে মহাভারত(বিজয়ম) শোনান ঋষি সৌনক ও অন্যান্যদের | আরো কয়েক শতক ধরে হয়ে চলা সংযোজনের পরে 'বিজয়ম'-এর শ্লোক সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় ১০০,০০০ এবং নাম পাল্টে হয় 'মহাভারত'| মহাভারতের ভীষ্ম-পর্বে 'হুন'দের উল্লেখ থাকায় ধরা হয় যে , মহাভারত তাঁর শেষ সংযোজন পায় গুপ্তযুগের প্রথম দিকে(চতুর্থ-শতাব্দী)| তবে মনে রাখতে হবে সাধারণ মানুষের কাছে মহাভারতের প্রথম আত্মপ্রকাশ সেই জনমেজয় আর বৈশম্পায়নের কথোপকোথনেই ||
Comments